সংবাদচর্চা রিপোর্ট:
কলঙ্কের দাগ নারায়ণগঞ্জের পিছু ছাড়ছে না । দেশে বড় ধরণের কোনো ঘটনা ঘটলেই তার দায় এসে পড়ে নারায়ণগঞ্জে। বিমান ছিনতাই, রূপপুর বালিশ দুর্নীতি, ক্যাসিনো কান্ড, করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের পর এবার নারায়ণগঞ্জে নতুন কলঙ্কের দাগ যুক্ত হয়েছে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আত্মস্বীকৃত খুনি ক্যাপ্টেন (বরখাস্ত) আব্দুল মাজেদ সোনারগাঁয়ের জামাই। বঙ্গবন্ধুর এই আত্মস্বীকৃত খুনির ফাঁসি কার্যকরের পর তার লাশ কঠোর গোপনীয়তার মধ্যে নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁ উপজেলার শম্ভুপুরা ইউনিয়নের হোসেনপুর এলাকায় দাফন করা হয়েছে। মাজেদের শ্বশুরবাড়ির পারিবারিক কবরস্থানে বৈরী আবহাওয়ার মধ্যে শনিবার দিনগত রাত ৩টার দিকে তার লাশ দাফন করা হয়।
এদিকে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আত্মস্বীকৃত খুনির লাশ সোনারগাঁয়ে দাফন করার খবর সকালে বিভিন্ন এলাকায় ছড়িয়ে পড়লে সাধারণ মানুষের মধ্যে চরম ক্ষোভের সৃষ্টি হয়।
এব্যাপারে নারায়ণগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আব্দুল হাই সংবাদচর্চাকে বলেন, আমরা জানতাম না তার শ্বশুরবাড়ি সোনারগাঁয়ে। বঙ্গবন্ধু ও শিশু রাসেলের খুনি মাজেদের দাফন সোনারগাঁয়ে হবে আগে জানতে পারলে রাতেই বাধা দিতাম । এটা নারায়ণগঞ্জের জন্য নতুন একটা কলঙ্ক।
তিনি আরো বলেন, তোফায়েল আহমেদের এপিএসকে এই খুনি হত্যা করে নদীতে লাশ ভাসিয়ে দিয়েছে। সোনারগাঁ খুনি মাজেদের লাশ দাফন করায় এর তীব্র নিন্দা এবং প্রতিবাদ জানাই। আমি ব্যক্তিগত ভাবে খুবই ক্ষুব্দ।
সোনারগাঁ উপজেলা আওয়ামী লীগের আহবায়ক শামসুল ইসলাম ভুইয়া সংবাদচর্চাকে বলেন, সোনারগাঁ বারো আউলিয়ার উপজেলা। আমরা এখানে কলঙ্ক বহন করতে চাই না। বেলা ৩টার মধ্যে খুনি মাজেদের লাশ না সরালে সোনারগায়ের জনগণ লাশ রাখবে না। ইতোমধ্যে তার কবরে জুতা ঝাড়ু নিক্ষেপ করা হয়েছে। সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে আওয়ামীলীগ, ছাত্রলীগ ,যুবলীগ স্বেচ্ছাসেবকলীসহ সকল সংগঠনের নেতাকর্মীরা মানববন্ধন ও বিক্ষোভ অব্যাহত রেখেছে। আমি সোনারগাঁ উপজেলা আওয়ামী লীগের পক্ষ সোনারগাঁয়ে লাশ দাফনের তীব্র নিন্দা এবং প্রতিবাদ জানাই।
সোনারগা উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মাহফুজুর রহমান কালাম সংবাদচর্চাকে বলেন, ভোলার কলঙ্ক সোনারগাঁয়ে কেনো। আমরা সোনারগাঁবাসী খুনি মাজেদের লাশ সোনারগাঁয়ে রাখব না। আমার লোকজন লাশ উত্তোলনের জন্য প্রস্তুত রয়েছে। প্রশাসনের কাছে আবেদন করা হয়েছে। প্রশাসন আমাদের জানাবে বলেছে। লাশ না সরালে আমি নিজ উদ্যোগে বঙ্গবন্ধুর খুনি মাজেদের লাশ সোনারগাঁ থেকে অপসারণ করব। তাতে আমার যে শাস্তি হয় হোক মাথা পেতে নেব।
সোনারগাঁও উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ড, উপজেলা আওয়ামী লীগ ও স্থানীয় বিভিন্ন রাজনৈতিক-সামাজিক সংগঠনের নেতৃবৃন্দ খুনি মাজেদের লাশ সোনারগাঁওয়ে দাফন করায় তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছেন।
শনিবার দিনগত রাত ১২টা ১ মিনিটে আবদুল মাজেদের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর হয়। পরে তার লাশ দাফন নিয়ে জটিলতা সৃষ্টি হয়। তার গ্রামের বাড়ি ভোলায় দাফনের কথা থাকলেও সেখানকার আওয়ামী লীগ নেতাকর্মী ও স্থানীয়দের প্রবল আপত্তির মুখে ঝুঁকি নিতে রাজি হয়নি ভোলার প্রশাসন। এর আগে বিকালে লালমোহন উপজেলা আওয়ামী লীগ কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এমপি শাওন বলেন, খুনি মাজেদের লাশ ভোলাবাসী গ্রহণ করবে না। মাজেদের লাশ প্রয়োজনে বঙ্গোপসাগরে ভাসিয়ে দিতে বলেন এমপি শাওন।